এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তায়হান ইসলাম আপন ও তীর্থ রুদ্র। মাগুরা আদর্শ কলেজের শিক্ষার্থী তারা। এর মধ্যে সোমবার (১ জুলাই) দিবাগত রাতে তীর্থকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান আমান। শহরের দরিমাগুরা এলাকায় এতিমখানার পেছনে নিয়ে প্যাথেড্রিন ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে সেখানে বন্ধু তীর্থকে একাই জবাই করে হত্যা করেন তিনি।
তারপর বাড়ি ফিরে মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে পরীক্ষায় অংশ নেন আমান। তবে পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল তীর্থ। তখনো গোটা মাগুরায় তীর্থকে খুঁজছিল তার পরিবার। তারা জানতেনই না যে তাদের সন্তান হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে আমান বান্ধবীকে নিয়ে তীর্থের মোটরসাইকেলে ঘুরে বড়বিলা এলাকায় বেশ কিছু সময় কাটান। দুপুরের পর কাশিনাথপুর গ্রামে খালার বাড়িতেও যান। সেখানে রান্নাঘরে মোটরসাইকেলটি লুকিয়ে রেখে ফিরে যান শহরে। অপেক্ষায় ছিলেন সুযোগ বুঝে মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে নেশা করবেন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর এভাবেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তীর্থ রুদ্র হত্যায় অভিযুক্ত বন্ধু তায়হান ইসলাম আমান। তিনি মাগুরা শহরের ঋষি পাড়ার জিয়াউর রহমান জিবলুর ছেলে। পুলিশের জেরার মুখে আমান হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তৌফিক আনাম।
হত্যার কারণ নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, কেবল নেশার টাকা জোগাড় ও ফুর্তি করার উদ্দেশে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তায়হান ইসলাম আমান বন্ধু তীর্থ রুদ্রকে গলাকেটে হত্যা করে। আর এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় একটি দোকান থেকে আমান তার মিঠু মামার নাম করে ৪০০ টাকা দিয়ে প্যাথেড্রিন ইনজেকশন কেনেন। আর বন্ধুকে গলাকেটে হত্যার জন্য শহরের সততা স্টোর থেকে কেনেন ধারালো একটি দা। সেই দা দিয়েই তীর্থকে হত্যা করেন আমান।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, আমানকে গ্রেপ্তারের পর সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে। ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র, ভিকটিমের মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।