মাদকসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া পরীমনিকে নিয়ে মুখ খুলেছেন তার প্রথম দ্বিতীয় স্বামী ফেরদৌস কবীর সৌরভ। তার মুখে পরীমনির নাম পরিবর্তন করে তারকা হয়ে যাওয়ার গল্প উঠে এসেছে।
পরীমনির দ্বিতীয় স্বামী ফেরদৌস কবীর যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বাসিন্দা।
মুঠোফোনে যুগান্তরকে তিনি বলেন, শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনির সঙ্গে তার ২০১২ সালের এপ্রিলে বিয়ে হয়। ভালো ফুটবল খেলতে পারায় তার ডাক পড়ে ঢাকায়। স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার বনশ্রীর একট বাসায় বসবাস শুরু করেন। পরীমনিকে ভর্তি করেন মিরপুরের একটি কলেজে।
সৌরভ জানান, কলেজে পড়া অবস্থায় মিডিয়াসংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির নজরে পড়েন পরী। ওই ব্যক্তি পরীর বিভিন্ন রকম ছবি তুলে পত্রিকায় ছাপেন। এরপর তাকে মডেল ও অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখান। তখন থেকেই শামসুন্নাহার স্মৃতি নাম পাল্টে হয়ে যান পরীমনি।
পরীমনির দ্বিতীয় স্বামী বলেন, এর কিছু দিন না যেতেই পরীমণি উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন শুরু করেন। ফলে তাদের মধ্যে দূরত্ব শুরু হয়। পরে মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত সেই ব্যক্তিকে পরীমনি বিয়ে করেছেন বলে জানতে পারেন তিনি। এরপর পরীমনির সঙ্গে তার আর তেমন যোগাযোগ হয়নি বলেও জানান তিনি।
২০১৫ সালে সৌরভ ঢাকা ছেড়ে কেশবপুরে ফিরে যান। বর্তমানে তিনি কেশবপুরেই অবস্থান করছেন।
বুধবার বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও মাদকসহ চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আটক করে র্যাব। এরপর বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় আদালত ইতোমধ্যে তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
পরীমনির গ্রেফতারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। বাংলাদেশের এই এলিট ফোর্সের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তার নাম শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমনি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তিনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও ৫-৭টি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকার সিনেমা জগতে আনেন প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ।
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি আরও জানান, ২০১৬ সাল থেকে তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করেন। মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে তিনি বাসায় একটি মিনি বার স্থাপন করেছেন। মিনি বার থাকায় তার বাসায় পার্টির আয়োজন করা হতো। সেই পার্টিতে বিভিন্ন প্রকার মাদক সরবরাহ করতেন রাজ।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার হওয়া নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে পরীমনির বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করতেন এবং পার্টিতে অংশ নিতেন।