ভারতের বহু মন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংবাদিকের ফোন হ্যাক করেছে ইসরায়েলি সংস্থার স্পাইওয়্যার ‘পেগাসাস’। দ্য ওয়্যার-এর রিপোর্ট তেমনই দাবি করছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, নেটওয়ার্ক ১৮, দ্য হিন্দু এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-সহ বেশকিছু বড় সাংবাদমাধ্যমের শীর্ষস্তরের সাংবাদিকদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে। ফোন হ্যাকিংয়ের তালিকায় মন্ত্রী এবং সাংবাদিক ছাড়াও রয়েছেন বহু ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মী।দ্য ওয়্যার-এর তথ্য বলছে, বেশিরভাগ হ্যাক করা হয়েছে ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে।
দ্য ওয়্যার-এর রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, হ্যাকিংয়ের তালিকায় রয়েছে ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিক। ৩ জন বিরোধী নেতা। মোদি মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী। দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধান এবং বহু ব্যবসায়ী। যদিও নরেন্দ্র মোদি সরকার হ্যাকিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। পাল্টা দাবি করেছে, ফোনে আড়িপাতা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার কোনো ভিত্তি নেই।
সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ভারত একটি মজবুত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সব নাগরিকের গোপনীয় রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়। এই প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ২০১৯-এ পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিল আনা হয়েছে। ২০২১-এ আনা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, যাতে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
২০১৯ সালের পর ফের খবরের শিরোনামে উঠে আসে ইসরায়েলের সফটওয়্যার ‘পেগাসাস’। রোববার সকালেই বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগ তোলেন, পেগাসাস আড়ি পাতছে দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ফোনে। পাশাপাশি আড়িপাতা হচ্ছে মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোনে এবং আরএসএস নেতাদের ফোনেও। তিনি লেখেন, এই বিষয়ে একটি রিপোর্টও নাকি শিগগিরিই প্রকাশ পাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। যদিও গোটা বিষয়টিকেই একটি ‘শক্তিশালী গুজব’ বলে উল্লেখ করেন স্বামী।
বিস্ফোরক এই দাবি করে রোববার সকালে টুইটে স্বামী লেখেন, কাদের ফোনে আড়িপাতা হচ্ছে, সেই তালিকা বিস্তারিত পেলেই তিনি প্রকাশ করবেন। সেই টুইটের পাল্টা উত্তর দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি ওই আড়িপাতার তালিকায় শুধু যুক্ত করে দেন, ‘…অনেক বিরোধী দলের সদস্যও’। অর্থাৎ, বিরোধীদলের সদস্যদের ফোনেও আড়ি পাতা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে খবরের শিরোনামে আসে ‘পেগাসাস’। সেখানে বলা হয়, সারা পৃথিবীর প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনের ফোনে আড়িপাতা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন কূটনীতিক, নেতা, সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তারা। ভারতের ব্যবহারকারীরাও ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন গবেষক, দলিত আন্দোলনকারী, সাংবাদিক। সেই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাসের কোনো অনৈতিক ব্যবহার করেনি।