সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বন্যা হতে পারে দেশের ২৫ জেলায়

সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বন্যা কবলিত হতে পারে দেশের ২০ থেকে ২৫ জেলার নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এমন তথ্য জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এরইমধ্যে সিলেট-সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট বিভিন্ন জেলায় নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। মুহুরী খোয়াই ও কংস নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

আগাম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পুরো জুন মাসজুড়ে দেশের বেশির ভাগ জেলায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হয়। গত ক’দিনে সীমান্তের উভয় পাশে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হচ্ছে। এর প্রভাবে দেশের ১০১টি নদী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ৭৮টিতেই পানি বাড়ছে।

টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দু’দিন ধরে বাড়ছে। কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে।

হালুয়াঘাটে হঠাৎ বন্যা হয়েছে মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢলে। ঘরবাড়ি, স্কুল, বাজারে পানি ঢুকে মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ করে তুলেছে। নালিতাবাড়ী, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে নদ-নদীর পানি। উজানের ঢলে সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী ছাপিয়ে দুই পাড়ের গ্রাম-গঞ্জ প্লাবিত করে জন-দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে।

কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে ৫০ চরগ্রাম প্লাবিত। পানি বৃদ্ধির ফলে ধরলা ও তিস্তার ৫০টি চরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পাট, ভুট্টা, আউশ ধান, বীজতলা ও সবজি খেত নিমজ্জিত হয়েছে।

ধরলার ভাঙনে সারডোবে বিকল্প বাঁধের অবশিষ্টাংশ ভেঙে পানি ঢুকছে। ফলে ভাটিতে থাকা ১৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার গ্রামীণ সড়ক ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। উজান থেকে নেমে আসা ভোগাই-চেল্লাখালি নদীর পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ীসহ ছয়টি ইউনিয়নের ৫০টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঢলের পানিতে ঝিনাইগাতী সদর বাজারসহ সদর ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠেছে। ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কোরবানির ঈদের সময়ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পানি থাকতে পারে। চলতি সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। ফলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মা অববাহিকায় পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এ বিষয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া আরটিভিকে বলেন, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ফেনী এ তিন জেলা বন্যায় কবলিত হয়েছে। ক্রমান্বয়ে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দেশের ২০ থেকে ২৫ টি জেলায় প্লাবিত হতে পারে।

তিনি বলেন, এ বন্যা কোনো কোনো জেলায় তিন থেকে চার দিন, আবার কোনো কোনো জেলায় ১৫ থেকে ২০ দিন স্থায়ী হতে পারে। মোটামুটি পুরো জুলাই মাসজুড়েই বন্যার প্রভাব থাকতে পারে বলে বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের এ কর্মকর্তা। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তৎপর আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন