বাস্তুশাস্ত্র আমাদের বাড়ির কোন অংশ কোন দিকে থাকলে ভালো হয়, তা নির্দিষ্ট করে দেয়। এটিই মূলত বাস্তুশাস্ত্রের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই নির্দেশ মেনে যথাযথ ভাবে একটি বাড়ি তৈরি হলে তার পর সেই বাড়ি সংক্রান্ত অন্য বাস্তুনির্দেশ উপস্থিত হয়। অতএব, এই ক্রম অনুসরণ করে চললে সবার প্রথমে জেনে নেওয়া প্রয়োজন যে বাস্তুশাস্ত্র মতে বাড়ির কোন অংশে শোওয়ার ঘর তৈরি করা উচিত!
এই ব্যাপারে বাস্তুশাস্ত্রের সূক্ষ্ম বিভেদ রয়েছে। অর্থাৎ পরিবারের কোন সদস্য কোন দিকের ঘরে ঘুমালে ভালো হয়, তা নিয়ে বাস্তুশাস্ত্রে বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে যে বাড়ির মালিকের শোওয়ার ঘর থাকা উচিত দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। যদি কারও পরিবারের সদস্যদের সংখ্যা অনুযায়ী শোওয়ার ঘর তৈরির সামর্থ্য বা প্রয়োজনীয়তা না থাকে, সেক্ষেত্রে শোওয়ার একটিই ঘর দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে থাকা বাঞ্ছনীয়।
এবার আসা যাক শোওয়ার ধরন নিয়ে বাস্তুশাস্ত্র কী বলছে সেই বিষয়ে। শোওয়ার ঘর তো না হয় দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে তৈরি করা হল, কিন্তু মাথা কোন দিকে রেখে ঘুমালে তা স্বাস্থ্য এবং ভাগ্যের পক্ষে ইতিবাচক হয়? এই শ্রেণীবিভাজনের কারণ একটাই- বাস্তুশাস্ত্রে দিকের গুরুত্ব অপরিসীম এবং প্রতিটি দিকের অধিপতি দেবতার অবস্থানের উপরে ভিত্তি করে সেই দিক সংক্রান্ত শুভাশুভের গণনা করা হয়ে থাকে। দেখে নেওয়া যাক, চার দিকের মধ্যে কোনটিতে মাথা করে ঘুমালে বাস্তুশাস্ত্রমতে কী ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে!
পূর্ব দিক – পূর্ব দিক বাস্তুশাস্ত্রে, বিশেষ করে শয়নের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত শুভ দিক বলে বিবেচনা করা হয়েছে। এই বিষয়ে বাস্তুশাস্ত্র বলছে যে কেউ যদি পূর্ব দিকে মাথা করে ঘুমোন, তাহলে জীবন ইতিবাচকতায় পূর্ণ হয়, সেই সঙ্গে বিদ্যাভ্যাসে মনোযোগ বাড়ে।
পশ্চিম দিক – বাস্তুশাস্ত্রমতে এই দিকে মাথা করে ঘুমালে বিপুল পরিমাণ ধন এবং সৌভাগ্য লাভ হয়। কেন না, বাস্তুশাস্ত্রে পশ্চিম দিক সর্বদা স্বর্ণ সৌভাগ্য লাভের উৎস রূপে বিবেচিত হয়ে থাকে।
উত্তর দিক – এই দিকটিও বাস্তুশাস্ত্রে পবিত্র বলে গণ্য করা হয়। তবে এই দিকে মাথা করে ঘুমানোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলছে বাস্তুশাস্ত্র, অন্যথায় জীবন রোগ এবং দারিদ্র্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
দক্ষিণ দিক – বাস্তুশাস্ত্রে দক্ষিণ দিকে মাথা করে ঘুমানোর ব্যাপারেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বস্তুতত এই ব্যাপারে পশ্চিম দিকের চেয়েও দক্ষিণ দিকের প্রসিদ্ধি বেশি। বাস্তুশাস্ত্র বলছে- দক্ষিণ দিকে মাথা করে ঘুমালে মনে নেতিবাচক চিন্তা আসে না, মানুষ সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ে না। সেই সঙ্গে এই দিকে মাথা রেখে ঘুমালে জীবন সুখ এবং সম্পদে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে।