২২ মিনিট কার্যত বন্ধ ছিলো তামিমের হার্ট, মৃত্যুর মুখ থেকে যেভাবে ফিরে এলেন তামিম!

বাংলাদেশের ক্রিকেটের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল আজ (তারিখ) সকালে এক চরম বিপদে পড়েছিলেন। সকালেই তিনি সুস্থ ছিলেন, ম্যাচ শুরুর আগে প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়কের সঙ্গে টস করেন এবং টসের পর কিছুক্ষণ কথাও বলেন। কিন্তু কিছু সময় পরেই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে যায়।

টসের পর ড্রেসিং রুমে ফিরে তামিম বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। প্রথমে বিষয়টি সাধারণ মনে হলেও, দ্রুত তা গুরুতর আকার ধারণ করে। দলের ফিজিও তাকে পরীক্ষা করে এবং তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। মাঠে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর প্রথমে কিছু পরীক্ষা করা হয়। ইসিজি (ECG) ভালো হলেও আরেকটি পরীক্ষায় তামিমের হৃদপিণ্ডে সমস্যা হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কিছু সময় তামিমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটে এবং তিনি কথা বলছিলেন, তবে হঠাৎ তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।

এই অবস্থায় তাকে ঢাকায় হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু হেলিকপ্টারে স্থানান্তরের সময় তামিম পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়েন। তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে এবং পালস পাওয়া যাচ্ছিল না।

চিকিৎসকরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে স্থানীয় হাসপাতালে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ দীর্ঘ ভ্রমণ তার জীবনকে আরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারত। তাকে দ্রুত হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।

হাসপাতালে ফিরে তামিমকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় এবং দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয়। সেখানে দেখা যায় তার দুটি আর্টারি ব্লক হয়ে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে স্টেন্ট (রিং) পরানো হয়।

কয়েক ঘণ্টার চিকিৎসার পর তামিমের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হতে শুরু করে। বর্তমানে তিনি সিসিইউতে (CCU) চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনার পর তামিমের স্ত্রী দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান এবং এখনো তার পাশে রয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নজরদারি করছেন। তামিমের সাবেক ও বর্তমান সতীর্থরা তার দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন।

বর্তমানে তামিম ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। তিনি কিছু কথা বলতে পারছেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে তাকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।

তামিমের পূর্বে কোনো হৃদরোগ ছিল কিনা, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শারীরিক পরিশ্রম, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস বা অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

তবে, দ্রুত সিদ্ধান্ত ও চিকিৎসার কারণে তামিমের জীবন রক্ষা পেয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক, দলের ফিজিও এবং সতীর্থদের দ্রুত পদক্ষেপই তাকে মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এটি আবারও প্রমাণ করেছে, খেলোয়াড়দের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

তামিমের ভক্তরা এখন তার দ্রুত সুস্থতার অপেক্ষায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই অভিজ্ঞ তারকা সুস্থ হয়ে আবার মাঠে ফিরতে পারবেন কিনা, তা সময়ই বলবে।

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন