আবারো ২৫ পয়সা কলরেটে নিয়ে ফেরার ঘোষণা দিল সিটিসেল!

একসময় দেশের মোবাইল ফোন অপারেটর বাজারে সিটিসেল ছিল জনপ্রিয় নাম। ২৫ পয়সা প্রতি মিনিট কলরেট এবং সিটিসেল টু সিটিসেল ফ্রি কথা বলার সুবিধাসহ গ্রাহকদের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিল এই অপারেটরটি। কিন্তু গত কয়েক বছরে সিটিসেল হারিয়ে যায়, এমনকি ২০১৬ সালে তৎকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে এর লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। তবে, এখন সিটিসেল আবারো ফিরে আসছে—সাশ্রয়ী কলরেটসহ আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে।

বর্তমানে সিটিসেলের হেড অফিস প্রায় জনশূন্য। অফিসের মধ্যে কয়েকটি ফাঁকা টেবিল, চেয়ার এবং কিছু কাগজপত্র ছাড়া বিশেষ কিছু চোখে পড়ে না। তবে, একসময় সিটিসেল ছিল দেশের মোবাইল অপারেটর বাজারের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী।

২০১৬ সালে সরকার সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল করে দিলে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সিটিসেলের মূল কোম্পানি প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (পিবিটিএল)-এর চেয়ারম্যান ছিলেন বিএনপির সাবেক সিনিয়র নেতা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান। তবে, সম্প্রতি সিটিসেল বিটিআরসিতে স্পেকট্রাম এবং লাইসেন্স ফেরতের জন্য আবেদন করেছে।

সিটিসেল বন্ধ হওয়ার পর বিটিআরসির এক বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, সরকারের কাছে সিটিসেলের পাওনা ছিল প্রায় ৪৭৭ কোটি টাকা। পরে ২৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করে সিটিসেল, তবে বাকি ২৩৩ কোটি টাকা এখনও পাওনা রয়েছে। এছাড়া, কোর্টের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সিটিসেলকে ১০ মেগাহার্জ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বরাদ্দ দেওয়া হয় মাত্র ৮.৮২ মেগাহার্জ। তাই, সিটিসেলের কাছে সরকারের মোট বকেয়া ১২৮ কোটি টাকা বলে নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে এই পরিমাণ নিয়ে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানিয়েছে।

সিটিসেল কর্তৃপক্ষ বলছে, তৎকালীন সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে কোম্পানিটি প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়া, ব্র্যান্ডের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ায় এবং সিটিসেল পরিবারের সঙ্গে যুক্ত প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আট বছর কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে দেশ, এবং সরকারের প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা কর ও ফি থেকে হাতছাড়া হয়েছে।

এদিকে, সিটিসেলের আবেদন পর্যালোচনা করে বিটিআরসি জানিয়েছে, আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সিটিসেল চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আবারো তাদের সাশ্রয়ী কলরেট এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশে আবারো সিটিসেলের অভ্যুদয় হতে পারে, এবং গ্রাহকদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হতে চলেছে, যেখানে তারা কম খরচে উচ্চমানের সেবা পাবে।

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন