দেশে প্রতি বছর চুরি হয় ১ বিলিয়ন ডলার বা ১২ হাজার কোটি টাকার গ্যাস। নতুন গ্যাসের অনুসন্ধান না পেলে মজুদ আগামী ৯ বছরে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরেন তারা। বিশেষজ্ঞরা জানান, অতিমাত্রায় রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অবস্থা নাজুক।
প্রাথমিক জ্বালানি নিশ্চিত না করেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোর দৌড়ে ছিল ক্ষমতাচ্যুত সরকার। যার কারণে সর্বোচ্চ চাহিদার তুলনায় ৬৭ ভাগ অবকাঠামো অলস বসে আছে। আর গুণতে হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ, বাড়ছে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ও ভোক্তা ব্যয়। অন্যদিকে দীর্ঘদিন উপেক্ষিত ছিল গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ। বাড়েনি নিজস্ব কয়লার ব্যবহারও।
সেমিনারে বলা হয়, ৬০ ভাগ গ্যাস ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ ও ক্যাপটিভ পাওয়ারে। চুরি হয় প্রায় ১০ ভাগের মত। ২০৩০ সাল নাগাদ গ্যাসের চাহিদা বেড়ে ৫০০ কোটি ঘনফুট দাঁড়াবে। উত্তোলন না বাড়লে এলএনজি নির্ভরতায় দাম হবে দ্বিগুণ।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন বলেন, ‘১২ ডলার এলএনজি যেটা আমি কিনছি, যদি হিসাব করি তাহলে যে গ্যাসটা আমাদের হারিয়ে যাচ্ছে এটার দাম প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। ১ বিলিয়ন ডলার প্রতি বছর। আপনি যতকিছুই বলেন না কেন, অনেক ইন্ডাস্ট্রিতেই দুই নম্বরি হচ্ছে।’
আরেক বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, ‘অবশ্যই এখানে রাজনৈতিক পক্ষপাত ছিল। পাশাপাশি ছিল দুর্নীতি। এই দুটো জিনিস এতো বেশি ডমিনেট করেছে যে, যেটা টেকনিক্যালি ডিটারমিন হওয়ার কথা ছিল হয়নি। এ কারণেই আজকে আমরা এ অবস্থায় এসে পড়েছি। এখান থেকে বের হওয়া খুবই কঠিন।’
সেমিনারে ব্যবসায়ীরা বলেন, গত দশ বছরে সূতা উৎপাদনে গ্যাসের খরচ বেড়েছে ৩ গুণের বেশি। তারপরও গ্যাসে সংকটে উৎপাদন কমেছে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ ।
বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘শিল্প যদি না থাকে, ইকোনোমি কিছুই হবে না। গ্যাস থাকবে, অতিরিক্ত গ্যাস হয়ে যাবে যখন শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা কি সেদিকেই যাচ্ছি? আমার তো মনে হয় সেদিকেই যাচ্ছি।’
সেমিনারের বলা হয়, প্রতিবছর গ্রাহক পর্যায়ে এনার্জি অডিট করে দক্ষতা বাড়ানো গেলে বিদ্যুতের চাহিদা কমবে ২০ ভাগের বেশি।