অর্ধশত বছরের আগের ঘটনা। বাবা মোঃ ইউসুফ এর মৃত্যুর পর ৪ বোন ও ২ভাইকে নিয়ে দুঃখ কষ্ট ও অভাবের কারণে ছোট চাচার আব্দুল রব এর পরামর্শে মায়ের সাথে ভোলায় থেকে ঢাকায় চলে যান বর্তমানে সুইজাল্যান্ডের ম্যারিও সিমো ভ্যামৌ আর মায়ের আদরের কুলসুম। পরে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাটপট্টিতে একটি ছোট ঘর ছয় ভাই-বোনদের নিয়ে উঠেন তার মা মাফিয়া বেগম।
আর সংসারের অভাবের কারণে কিছুদিন পর কুলসুম ও তার ছোট বোন সমেহা বা সুমির আশ্রয় হয় একটি এতিম খানায়। তখন কুলসুমের বয়স ৫ বছর আর ছোট বোন সমেহা বা সুমির বয়স ৩ বছর। পরে এতিম খানা থেকে তাদের দুই বোনকে দত্তক দেয় সুইস দম্পতি।
এদিকে র্দীঘ ৪৫ বছর পর ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটর মনজুরুল করীম এর সহায়তায় মাকে ফিরে পায় সুইজাল্যান্ডের ম্যারিও সিমো ভ্যামৌ আর আদরের কুলসুম। বুধবার (২০ এপ্রিল) কুলসুম তার বাবার বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চটিয়া গ্রামের মনু ফকির বাড়ি আসেন। আর কুলসুমের গ্রামের বাড়ি ফিরে আসার খবরে পুরো গ্রাম জুড়ে বইছিল আনন্দের জোয়ার।
কুলসুম ও তার স্বামী সুইজাল্যান্ডের বাসিন্দা আন্দে সিমন ভারমুটকে তার গ্রামের বাড়ির পরিবারের সদস্য ফুল দিয়ে বরণ করেন। তারা আসবে বলেই বাড়িতে ডেকোরেটর দিয়ে সাজানো হয়েছে। তবে ১৯৭৩ সালে মায়ের সাথে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় গেলেও আজ মায়ের সাথে ফেরা হয়নি কুলসুমের। তার মা ৮৫ বছরের হওয়ায় অসুস্থ্যতার কারণে স্বামীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরেন তিনি।
কুলসুমের ছোট চাচা মোঃ আব্দুল রব জানান, র্দীঘ ৪৫ বছর পর আমার ভাইতিকে দেখতে পেয়েছি। সে আমাকে প্রথমে চিনতে পারেনি। পরে চিনতে পেরেছে। আমরা খুবই খুশি। সকালে বাড়িতে ঢোকেই কুলসুম তার বাবার কবর জিয়ারত করেন। এরপর সবার সাথে একে একে দেখা করেন। যদিও আমরা তার ভাষা বুঝতে পারিনা। কিন্তু ঢাকার সাংবাদিক মনজুরুল করিম ভাইর মাধ্যমে আমাদের কথা তাকে বুঝিয়ে বলি। সেও যা বলে তার আবার মনজুরুল করিম আমাদের বুঝিয়ে বলে।
তিনি আরো জানান, বুধবার সকাল ৮ টার দিকে গ্রামের বাড়ি তারা আসে। আর দুপুর ১ টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। স্থানীয় মোঃ মাইনুলসহ অনেকে জানান, আমরা ম্যারিও সিমো ভ্যামৌ বা কুলসুম এর গ্রামের বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে তাকে দেখতে আসি এবং ফুল দিয়ে তাদের বরণ করি।