ভারতের কর্ণাটকে হিজাব পরার কারণে ক্লাসে নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রীদের নিয়ে এখন উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ হিজাব পরুক কিংবা না পরুক সেটা তার একান্ত বিষয়। কোনো বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত নেওয়াই হচ্ছে ধর্মীয় গোঁড়ামি। এ নিয়মের বিরুদ্ধে এখন একে একে সবাই মুখ খুলছেন।
গেলো মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) হিজাব পরা এক কিশোরী মুসকান খানের দিকে গেরুয়া উত্তরীয় পরা একদল যুবক যেভাবে তেড়ে আসে, তাতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ওই ঘটনার পর ভারতের ভেতরে ও বাইরে আলোচনার ঝড় ওঠে। এমনকি ভারতের রাজনৈতিক নেতারাও বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
হিজাব ইস্যুতে নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মালালা ইউসুফজাইয়ের এক টুইট এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি লিখেছেন, হিজাব পরার কারণে মেয়েদের স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বেশি কাপড় বা কম কাপড়, যে কোনো অছিলাতেই নারীদের পণ্য বানানোর প্রবণতা চলছেই।
নারী শিক্ষার পক্ষে আন্দোলনে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পাওয়া মালালা তার টুইটে ‘মুসলিম নারীদের কোণঠাসা করা’ বন্ধ করতে ভারতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। দেশটির শীর্ষস্থানীয় সব মিডিয়ায় মালালার টুইট নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করছেন। তবে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এই টুইটের জন্য মালালার ওপর ক্ষেপেছেন।
বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র এক টুইটে মালালার তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন- আফগানিস্তান, ইরান, পাকিস্তানে হিজাব না পরার জন্য মুসলিম নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। শুধু হিন্দু বা শিখ হওয়ার কারণে পাকিস্তানে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। এসব নিয়ে তিনি (মালালা) কখনই একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।
দিল্লিতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় উসকানি দেয়ার অভিযোগ থাকা বিজেপির এই নেতা আরও বলেন- মালালার ‘কট্টর ইসলামী জিহাদি এজেন্ডা’ রয়েছে।
আরেক বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা এই টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন- পাকিস্তানে ‘হিন্দু মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরিত করা’ নিয়ে কেন কথা বলেন না মালালা। তিনি বলেন, এটা বিস্ময়কর যে পাকিস্তানে হিন্দু ও শিখ নারীদের জবরদস্তি ধর্মান্তরকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মালালা কখনই কথা বলেননি। অথচ আসল তথ্য যাচাই না করেই তিনি আজ টুইট করলেন।