সময়ের আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরী মণিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে ডিবির দাবি, পরী মণি চলচ্চিত্রের আড়ালে খারাপ ব্যবসা করতেন এবং এই ব্যবসাগুলোতে কারা তাকে পেট্রোনাইজ করেছেন, তাদের কথাও পরী মণি স্বীকার করেছেন।
আজ শুক্রবার বেলা ২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির ডিবি কার্যালয়ের সামনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নজরুল ইসলাম রাজ অন্ধকার পথে কিছু তথাকথিত মডেলদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মানুষকে মনোরঞ্জন করাতেন।’
পরী মণির বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে, জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পরী মণি একজন চিত্রনায়িকা। তিনি এর আড়ালে যে খারাপ ব্যবসাগুলো করতেন এবং এ ব্যবসাগুলোতে কারা তাকে পেট্রোনাইজ করেছেন, এ কথাগুলো তিনিও স্বীকার করেছেন। আমরাও নজরদারি করছি। জিমিকেও হয়তো আমরা শিগগিরই গ্রেপ্তার করব।’
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ‘যাদের মনোরঞ্জন করাতেন তাদের বিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি। আমরা রাজের সঙ্গে আরও বিস্তরিত কথা বলেছি। মূলত তার কোনো লেখাপড়া নেই। তিনি একজন মূর্খ মানুষ। এখানে তিনি নিচু চাকরি করতেন। আজকে তিনি উপরের পর্যায়ে গেছেন। এটার জন্য দায়ী কিছু খারাপ প্রকৃতির মানুষ।’
ডিসি হারুন বলেন, ‘রাজ আমাদের কিছু নাম বলেছেন, যাদের তিনি বিভিন্ন মডেল সাপ্লাই দিতেন। যেহেতু জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে, সেহেতু তিনি আমাদের কাছে আরও কিছু তথ্য দেবেন। সেসব মানুষের নাম আমরা পরে বলতে পারব। তবে, উচ্চ মধ্যবিত্ত বা বড় লোকের সন্তানদের নিয়ে এ কাজগুলো করতেন। মূলত ঘরোয়া পার্টিতে এসব হতো।’
রাজধানীর বনানীতে গত বুধবার বিকেল ৪টার দিকে পরী মণির বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। প্রথমে পরী মণি বাসায় র্যাবের সদস্যদের প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না। অভিযান শুরুর ৩০ মিনিট পর ওই বাসার ভেতরে ঢোকেন র্যাব সদস্যেরা। র্যাবের দাবি, পরীর বাসায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড বা এলএসডি, আইস ((ক্রিস্টাল মেথ)) ও ইয়াবা জব্দ করা হয়। সে সময় পরী মণি ও তার গাড়িচালককে আটক করে র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
পরে পরী মণির দেওয়া তথ্যে গত বুধবার রাত ৮টার দিকে র্যাবের একটি দল বনানীর জি-ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ৪১ নম্বর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে নজরুল ইসলাম রাজ ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরী মণি ও রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে তিনটি মামলা করে র্যাব। পরে চিত্রনায়িকা পরী মণি ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ চারজনকে মাদক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত প্রত্যেককে চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারপর তাদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তভার পায় ডিবি। ওই মামলায় ডিবি তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।