নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে একটি কবরস্থান থেকে ছয়টি ককটেল উদ্ধারের পর বিকেলে নিষ্ক্রিয় করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়করণ দল ‘বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট’।এর আগে শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকালে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোপিন্দী বড় বিনাইরচর কবরস্থানে পড়ে থাকা একটি ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ককটেলগুলো উদ্ধার করে আড়াইহাজার থানা পুলিশ। পরে তারা ঘটনাস্থলটি ঘিরে রাখেন।
ককটেলগুলো কালো রঙের স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ছাই রঙের প্যারাসুট কাপড়ের ব্যাগের ভেতরে সাদা পলিথিনে মোড়ানো ছিল।তবে ককটেলগুলো নিষ্ক্রিয় করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়করণ দলকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ছয়টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয়করণ কাজ শেষ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম সময় নিউজকে বলেন, কবরস্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছয়টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশ উদ্ধারকৃত ককটেলগুলোসহ ঘটনাস্থলটি ঘিরে রাখে।
তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষে এগুলো নিষ্ক্রিয় করা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়করণ দল ‘বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট’কে খবর দেওয়া হয়। পরে তারা এসে ককটেলগুলো নিষ্ক্রিয় করেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ককটেলগুলো এখানে কিভাবে এলো, এর সাথে কারা জড়িত,আমরা এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। পরে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এর আগে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ককটেলগুলো উদ্ধার করেও নিশ্চিত করে না বলে সাংবাদিকদের কাছে বোমা সদৃশ বস্তু বলে প্রচার করেন। এতে পুরো জেলায় আবারও জঙ্গি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, ব্যাগের ভেতরে কালো স্কচটেপে মোড়ানো বোমা সদৃশ ছয়টি বস্তু পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে সেগুলো আমাদের কাছে ককটেল বলে মনে হয়েছে। তবে আমরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই বলে ডিএমপির বোমা নিস্ক্রিয়করণ দলকে খবর দেওয়া হয়।
কবরস্থানের খাদেম চান শরীফ জানান, সকালে কবরস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি কবরের পাশে কালো রঙের একটি ব্যাগের ভেতর পলিথিন মোড়ানো কালো কিছু বস্তু দেখতে পান তিনি। বস্তুগুলো বোমা বলে সন্দেহ হলে স্থানীয়দের ডেকে এনে দেখান। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসে।
এলাকাবাসির অভিযোগ, আড়াইহাজারে ডাকাতির ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে একের পর এক ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ভুক্তভোগীরা থানায় গিয়ে ডাকাতির মামলা করতে গেলে পুলিশ চুরির মামলা নিচ্ছে। ডাকাতির মামলা না করে চুরির মামলা করতে পরামর্শ দিচ্ছে। এতে করে উপজেলায় আইনশঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটছে। বিভিন্ন ধরণের অপরাধও বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই পর পর দুইদিন উপজেলার বালিয়াপাড়া ও ব্রামন্দি ইউনিয়নে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশ ককটেল উদ্ধার করেও বোমা সদৃশ বস্তু বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ব্রামন্দি ইউনিয়নের নোয়ারপাড়া গ্রামের লোকমান মাস্টারের বাড়িতে হয়েছে। ওই মাস্টারের বাড়ি শুক্রবার ককটেল উদ্ধারের ঘটনাস্থল বড় বিনাইরচর কবরস্থান থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে। তাদের ধারণা, ডাকাতরা ককটেলগুলো ফেলে যেতে পারে।