এক লঘুচাপের প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আরেকটি সুস্পষ্ট লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি আরো শক্তি সঞ্চার করেছে। এর প্রভাবে টানা চার দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিভারী বর্ষণ হচ্ছে, যা আজও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এছাড়া আবারও চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কার রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরো শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের (খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর) স্থলভাগে অবস্থান করছে। এর প্রভাব এখনো বিরাজমান থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলো এবং দেশের উপকূলীয় এলাকায় জারি করা তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
লঘুচাপের প্রভাবে বুধবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোনো কোনো জায়গায় অতিভারি বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি টেকনাফে ১৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীতে ১৯০, চট্টগামে ১২৯, মংলা ১২৩, কক্সবাজারে ১১৯, খেপুপাড়ায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, প্রবল মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে জারি করা তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত আজও বহাল রাখা হয়েছে।
আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও এর কাছাকাছি এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা বাড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী দুদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। পরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাত কমতে পারে।
পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বাড়তি অংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বাড়তি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।