টাঙ্গাইলে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত করা বহুল আলোচিত বিশালাকার ষাঁড় ‘শাকিব খান’, ‘ডিপজল’ ও ‘মানিক’ বিক্রি হয়নি। কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় তিনটি ষাঁড় বিক্রি করেননি বলে জানিয়েছেন খামারিরা। তবে ‘রতন’ নামের ষাঁড়টি বিক্রি হলেও দাম হয়েছে খুব কম।
কোরবানির ঈদ লক্ষ্য করে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার মিরিকপুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা জোবায়ের ইসলাম দুটি ষাঁড় লালন–পালন করেন। এর একটির নাম শাকিব খান। ৩১ মণ ওজনের শাকিব খানের দাম ধরেছিলেন ১৩ লাখ টাকা। অন্য ষাঁড় ডিপজলের ওজন ছিল ৩০ মণ। দাম ধরা হয়েছিল ১২ লাখ টাকা। দুই বছর সাত মাস আগে এই খামারেই জন্ম নেয় ষাঁড় দুটি। সাদা রঙের ষাঁড়টিকে খামারি তখন আদর করে নাম রাখেন শাকিব খান। আর কালো রঙের ষাঁড়টির নাম রাখা হয় ডিপজল
জোবায়েরের খামারে বড় করা এ দুটি ষাঁড় এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অনলাইন পশুর হাটে এদের ছবি দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে দেখেন। শাকিব খানের দাম ওঠে আট লাখ টাকা আর ডিপজলের দাম ওঠে সাত লাখ টাকা। শাকিব খানকে ১১ লাখ টাকা এবং ডিপজলকে ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছিলেন জোবায়ের।
৩১ মণ ওজনের শাকিব খানের দাম ধরেছিলেন ১৩ লাখ টাকা। অন্য ষাঁড় ডিপজলের ওজন ছিল ৩০ মণ। দাম ধরা হয়েছিল ১২ লাখ টাকা।জোবায়ের বলেন, শাকিব খান ও ডিপজলই তাঁর উপজেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়। তবে দাম না ওঠায় এ বছর ষাঁড় দুটি বিক্রি করেননি। তিনি আরও এক বছর লালন–পালন করে সামনের বছর কোরবানির ঈদের সময় আবার কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রির উদ্যোগ নেবেন।
অন্যদিকে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের কলেজছাত্রী হামিদা আক্তার তাঁর খামারে এবার ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত করেছিলেন দুটি ষাঁড়। এদের মধ্যে ৩৮ মণ ওজনের মানিকের দাম চেয়েছিলেন ১৪ লাখ টাকা। আর ৩৭ মণ ওজনের রতনের দাম চেয়েছিলেন ১৩ লাখ টাকা। চার বছর আগে কাছাকাছি সময়েই হলস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় দুটি হামিদার খামারে জন্ম নেয়। তখন আদর করে এদের নাম রাখা হয় মানিক ও রতন। দেখতে দেখতে মানিক-রতন শুধু উপজেলাতেই নয়, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ষাঁড় ওঠে।
খামারি হামিদা আক্তার বলেন, খামারে মানিক ও রতনের দাম একত্রে ২০ লাখ টাকা উঠেছিল। কিন্তু গরু ব্যবসায়ীরা বাকিতে নিতে চাওয়ায় তাঁদের কাছে বিক্রি করেননি। পরে ঈদের আগে এ দুটিকে ঢাকার গাবতলী পশুর হাটে নিয়ে যান। সেখানে মানিকের দাম ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। কিন্তু তিনি বিক্রি করেননি। পরে বাধ্য হয়ে রতনকে ঈদের দিন ভোরে মাত্র ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে আসেন। মানিককে আরও এক বছর লালন–পালন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ষাঁড়টিকে প্রতিদিন ১ হাজার টাকার খাবার খাওয়াতে হয়। এ জন্য রতনকে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এই টাকা দিয়ে মানিককে লালন–পালন করে সামনের কোরবানির ঈদে কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করবেন।