আবারও আবাহনীর জয়ের নায়ক মুশফিকুর রহীম। আগেরদিন খেলাঘর সমাজকল্যাণের বিপক্ষে মাত্র আটরানে আউট হলেও আজ শেরেবাংলায়, শক্তিশালী গাজী ব্যাংকের বিপক্ষে ৫৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক।অধিনায়কের সাথে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। তৃতীয় উইকেটে এই জুটির ১০৫ রান আবাহনীকে পাইয়ে দিয়েছে ৭ উইকেটের দারুণ জয়।
নানা মুনির নানা মত থাকতেই পারে। কেউবা হয়ত বাড়াবাড়ি বলেও মন্তব্য করতে পারেন। হয়ত বলবেন, কেন তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসানের অবদান কম কিসে?তবে কঠিন সত্য হলো, বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলা, দলের সাফল্যে কার্যকর অবদান রাখা এবং ম্যাচ জেতানোর ভূমিকায় সবার সেরা মুশফিক। এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানই দেশের এক নম্বর ম্যাচ উইনার। সেটা শুধু জাতীয় দলে নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটেও। তার প্রমাণ এবারের প্রিমিয়ার লিগের পারফরমেন্স।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এবারের লিগে আজ নিয়ে তিন-তিনটি ম্যাচে আবাহনীর জয়ের রূপকার, নায়ক মুশফিকুর রহীম। টপ অর্ডার বিশেষ করে, তিন ফ্রন্টলাইনার নাইম শেখ, মুনিম শাহরিয়ার আর নাজমুল হোসেন শান্ত প্রায় ম্যাচে ব্যর্থ; কিন্তু মুশফিক ঠিক জায়গামত হাল ধরেছেন। শুরুর ব্যর্থতা ও বিপর্যয়েও একদিকে অনঢ়, অনমনীয় আবাহনী অধিনায়ক।তার প্রমাণ মিলবে ছোট্র এক পরিসংখ্যানে, পারটেক্সের বিপক্ষে ৩৮ রানে নট আউট, ওল্ডডিওএইচএস-এর সাথে ৬, আবার তৃতীয় ম্যাচে ব্রাদার্সের বিপক্ষে অপরাজিত ৩৭, খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির বিপক্ষে ৮ রানে আউট এবং আজ মঙ্গলবার শেরেবাংলায় গাজী গ্রুপের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ খেলায় ৫৩ রানের হার নামা ম্যাচ জেতানো ইনিংস।
১৫২ রান করতে গিয়ে এদিনও ধুঁকছিল আকাশী হলুদরা। দলের রান ৪৮ (৮.২ ওভারে) হতেই সাজঘরে ফেরেন তিন টপ অর্ডার নাইম শেখ (৭ বলে ১০), মুনিম শাহরিয়ার (৩৩ বলে ২৮) আর নাজমুল হোসেন শান্ত (৭ বলে ৫ রান)।পরের ১১.৪ ওভারে দরকার পড়ে ১০৩ রানের। ওভার পিছু ৯ রানের বেশি দরকার, এমন অবস্থায়ও অবিচল আস্থায় একদিক আগলে রাখেন মুশফিক। পাশাপাশি রানের চাকা সচলও করেন। তাকে সঙ্গ দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
ধীরে ধীরে গাজী গ্রুপের বোলার ও ফিল্ডারদের কাছ থেকে খেলার পূর্ণ নিয়ন্ত্রনও চলে আসে তাদের হাতে। চতুর্থ উইকেটে এই জুটির অবিচ্ছন্ন ১০৫ রানেই আবাহনী ৭ উইকেট হাতে রেখে ১২ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে। অধিনায়ক মুশফিক ৩৫ বলে ১৫১.৪২ স্ট্রাইকরেটে ৫৩ রানে নটআউট থাকেন। আর মোসাদ্দেক তিন ছক্কা ও চার বাউন্ডারিতে ২৮ বলে খেলেন ৫০ রানের টর্নেডো ইনিংস।
এর আগে দুই ওপেনার মেহেদি (৩২ বলে ৭ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ৪৩) ও বাঁ-হাতি সৌম্য সরকারের ( ৫০ বলে ৬৭) দৃঢ়তায় দেড়শো’তে গিয়ে ঠেকে গাজী গ্রুপ।
আবাহনীর লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ২ উইকেট দখল করে গাজী গ্রুপের উদ্বেধানী জুটি ভাঙ্গার পাশাপাশি রান গতিও কমিয়ে দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন।ইয়াসির আলী (১৬ বলে ৯), অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩ বলে ৫), জাকির হাসান (৩ বলে ১), আরিফুল হক (৭ বলে ৫) আর কিপার আকবর আলী (১ বলে ১*) সবাই ব্যর্থতার ঘানি টানলে গাজী গ্রুপের বড় স্কোরের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।