তিন লাখ টাকার জন্য বন্ধুর বাবাকে হত্যা

নীলফামারীর জলঢাকায় তিন লাখ টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বন্ধুর বাবাকে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে রুবেল (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী।মোবাইল ফোন ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে শনিবার (৫ জুন) রাতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরের মৌচাক টমস্টার বাজারের তেলির চেল্লি বস্তি থেকে ঘাতক রুবেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে জলঢাকা উপজেলার উত্তর চেরেঙ্গা গ্রামের মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে এবং জলঢাকা শহরের চৌধুরী সুপার মার্কেটের কসমেটিকস ব্যবসায়ী।

হত্যার শিকার হাফিজুর রহমান একই গ্রামের মৃত তালেব উদ্দিনের ছেলে এবং জলঢাকা পৌর এলাকার জাহান অটোরাইস মিলের ব্যবস্থাপক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাফিজুরকে হত্যার কারণসহ হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে ঘাতক রুবেল।রোববার (৬ জুন) বিকালে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে রুবেলকে গ্রেপ্তারসহ হত্যারহস্য উদঘাটনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান (বিপিএম, পিপিএম)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ঘাতক রুবেল এবং নিহত হাফিজুর রহমানের ছেলে সাদেকুল ইসলাম দু’জনে বন্ধু। জলঢাকা বাজারে তাদের পাশাপাশি দোকান আছে। ঋণে জর্জরিত থাকায় টাকার প্রয়োজনে রুবেল সাদেকুলের কাছে তার দোকানঘরটি তিন লাখ ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রির পাকা কথা দেয়। সে অনুযায়ী ৩১ মে সন্ধ্যায় তিন লাখ টাকা পরিশোধের কথা ছিল সাদেকুলের। ওই দিন সন্ধ্যায় সাদেকুলের বাবা হাফিজুর রহমান ওই টাকা দেওয়ার জন্য জলঢাকা শহরে আসেন।

পরে রুবেল সেই টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে কৌশলে হাফিজুর রহমানকে শহরের অদূরে একটি আবাদি জমিতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তবে হত্যার পর টাকা নেওয়ার আগেই পথচারীদের বিচরণে সে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হাফিজুরের মরদেহ ও নিহতের সাথে থাকা দুই লাখ ৮৫ হাজার ৩০৯ টাকা উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ১ জুন নিহতের ছেলে সাদেকুল ইসলাম (২৫) বাদি হয়ে রুবেলকে প্রধান আসামী করে জলঢাকা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দেয় ঘাতক রুবেল। এরপর ডিজিটাল প্রযুক্তির সহযোগিতায় শনিবার রাত পৌনে তিনটার দিকে গাজীপুর জেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে রুবেল বলে, “দোকানঘর ক্রয়ের ওই টাকা ছিনতাই করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আমি হাফিজুরকে হত্যা করি।”

জলঢাকা থানার পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রোববার (৬ জুন) বিকেলে রুবেলকে নীলফামারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সবদেব রায়ের আদালতে হাজির করা হলে সে হত্যার ঘটনাসহ দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। জবানবন্দী রের্কড শেষে ঘাতক রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিজা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সদর থানার পরিদর্শক আব্দুর রউপ, পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী, জলঢাকা থানার পরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফিরোজ কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন