প্রক্রিয়াজাত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝঁকিপূর্ণ

বর্তমানে আমাদের দেশে স্থুলতার হার ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে; যার একটি বৃহত্তম উৎস হলো প্রক্রিয়াজাত খাবার। এ খাবারগুলো প্রস্তুত করা থাকে বলে মানুষ সহজেই খেয়ে ফেলছে। কিন্তু এই খাবারগুলোতে চিনি, লবণ ও তেল বেশি থাকে। পাশাপাশি খাবারগুলোতে মুখরোচক করার জন্য বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক উপাদান দিয়ে পরিবেশন করে তৈরি করা হয়; যা স্বাস্থ্যের জন্য একেবারে ভালো নয়। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য, বয়স্ক ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।

আসুন জেনে নেই ঝঁকিপূর্ণ কারণগুলো

পুষ্টির ঘাটতি ঘটতে পারে: প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোর মধ্যে কয়েকটি খাবার হলো বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, নুডুলস, কেক ইত্যাদি। এই খাবারগুলোতে উচ্চমাত্রায় ক্যালরি, প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে; যা অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ কোলেস্টরল ও ফ্যাটি লিভারের মতো নানা রোগের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত ভিটামিন মিনারেলস ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট না থাকায় পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে।

পরিপাকতন্ত্রজনিত সমস্যা: প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলিতে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকায় হজম কম হয়; যা পেপটিক আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা সমস্যা হতে পারে।

লিভারের সমস্যা: প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো প্রস্তুত করা থাকে বলে অল্প সময়ে বেশি পরিমাণ খাওয়া যায়; যা ক্যালরি বেড়ে অতিরিক্ত ফ্যাট জমে যা লিভারের সমস্যা হতে পারে।

প্রদাহ বাড়ায়: প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো তৈরি করতে হাইড্রোজেনেড হয়ে ট্রান্সফ্যাট হয়ে যায়; যা ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে থাকে; যা শরীর জারন হয়ে প্রদাহ বাড়িয়ে তুলতে পারে।

হাঁপানি সমস্যা: একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ,শিশুরা প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে তিনবার প্রসেস বা জাঙ্কফুড খাবার খায় তাদের মধ্যে হাঁপানি ও একজিমা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ব্রন বা অ্যালার্জি: কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারগুলো রক্তের শর্করার মধ্যে স্পাইক জন্ম দেয় এবং ব্রনকে ট্রিগার করে।

প্রজনন সমস্যা: প্রসেস খাবারে ফ্যাটালেট থাকে যা দেহের হরমোনগুলোকে ব্যাহত করতে পারে।জন্মের ত্রুটিসহ প্রজনন সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

এন্ড্রোক্রাইন এবং কার্ডিও ভাস্কুলার সিস্টেমের সমস্যা: গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি সপ্তাহে দুইবারের বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিস, করোনারি হার্ট ডিজিজ ঝুঁকির কারণে মৃত্যু হয়েছে।

সেন্ট্রাল স্নায়ুতন্ত্র বা হতাশা: গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দীর্ঘমেয়াদে প্রসেস ফুড বা জাঙ্ক ফুড খেয়েছেন তাদের হতাশার ঝুঁকি ৫১% বেশি।

মানসিক প্রভাব: প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণের ফলে মস্তিকের ডোপামিন নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, যা মানসিক প্রভাব ফেলে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি: সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণের কারণে ক্যান্সারের ঝঁকি ১২%।

টিপস
১. সবসময় ঘরের তৈরি খাবার খেতে চেষ্টা করবেন।
২. অফিসে বা বাইরে খেতে হলে ঘরে রান্না করা খাবার বহন করে নিয়ে যাবেন।
৩. যারা বাইরে কাজ করেন একান্তই বাড়ির খাবার খেতে না পারলে বাদাম, ফল, ডিম সিদ্ধ মতো ছোট ছোট স্ন্যাকস নিতে পারেন।
৪.পর্যাপ্ত পানি খাবেন প্রতিটি খাবারের পর।
৫.প্রতিটি খাবার হেলদি ও স্বাস্থ্যসম্মত নির্বাচন করবেন। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন।

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন